কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার-কেওড়া জল ও গোলাপ জল কি এক -?
কেওড়া জল ও গোলাপ জল কি এক কথাটা লিখে অনেকেই গুগলে সার্চ করে। তার জন্যই আজকে আমার লাঠি সাজানো হয়েছে কেওড়া জল নিয়ে। আজকে আমরা জানবো গোলাপ জল কি এক না ভিন্ন এবং কেওড়া জালের উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে।
কেওড়া জল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় আমরা ক্লিয়ার করব কেওড়া জল নিয়ে জনসাধারণের মনে জমে থাকা অনেক প্রশ্ন নিয়ে। আপনি যদি কেওড়া জল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তবে আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন। চলুন দেখা যাক কি কি থাকছে আমাদের বিস্তারিত আলোচনায়।
পোস্ট সূচিপত্র: কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার
- কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার
- কেওড়া জল ও গোলাপ জল কি এক?
- ত্বকের যত্নে কেওড়া জলের ব্যবহার
- খাবারে কেওড়া জলের ব্যবহার
- স্বাস্থ্যের জন্য কেওড়া জল কতটা উপকারী
- কেওড়া জল ব্যবহারে সতর্কতা
- কেওড়া জলের ক্ষতিকর দিক
- সর্বশেষ : কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার
কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার
কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার অনেক। আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহারযোগ্য অনেক জিনিসেই কেওড়া জল ব্যবহার করা হয়। যেমন খাবার দাবার, প্রসাধনিতে ইত্যাদি। কেওড়া জলে রয়েছে ফেনোল ট্যানিন , গ্লাইকোসাইড, আইসোফ্যাভেন্স,ক্যারটিনয়েড এর মতো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান। কেওড়া জলের সুগন্ধে মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কেওড়া জলের ব্যবহার রাখা উচিত।
কাওড়া জলের সঠিক উপায়ে উপকার পাওয়া যাবে যখন এর সঠিক ব্যবহার করা হবে। তাই আমাদের কেওড়া জল ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে এবং সঠিক ব্যবহার করতে হবে। এতে বিভিন্ন উপাদান শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। তাছাড়া কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কেওড়া জল প্রাকৃতিক উপাদানের চেয়ে রাসায়নিক কেমিক্যাল বেশি ব্যবহার করছে এতে কেওড়া জলের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। ফলে আমাদের শরীরের বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
কেওড়া জল ও গোলাপ জল কি এক
পাঠক রা অনেক সময় জানতে চাই কেওড়া জল ও গোলাপ জল কি? তাদের ধারণা ক্লিয়ার করব আজ আমরা আমাদের আর্টিকেলে। অনেকে কেওড়া জল ও গোলাপ জলকে এক মনে করেন। কিন্তু ভুলেও এই কাজটি করবে না কারণ কেওড়া জল ও গোলাপ জল সম্পূর্ণ আলাদা দুটো জিনিস। গোলাপজল তৈরি হয় গোলাপের পাপড়ি সাথে জল মিসিয়ে আর কেওড়া জল তৈরি হয় প্যান্ডানাস নামক এক ধরনের গাছের কান্ড থেকে।
আরো পড়ুন ঃ আম খাওয়ার সঠিক নিয়ম
তবে আজ কাল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্যান্ডানাস গাছের কান্ডের সাথে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল মিশ্রিত করছি যা কেওড়া জলের গুনগত মানকে নষ্ট করছে। তাই আমাদের কেওড়া জল কেনার সময় বাছাই করে বিশ্বস্ত লোকের কাছে কিনতে হবে।
আবার জেনে রাখা ভালো যে কেওড়া জলে যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে গোলাপ জলে সেসব পুষ্টি উপাদান নেই আবার গোলাপজলে যে সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে সবগুলোকে কেওড়া জলে নেই। গোলাপ জলও কেওড়া জল এর ব্যবহারও ভিন্ন ভিন্ন। তাই গোলাপ জল ও কেওড়া জল যখন যেটা প্রয়োজন তখন সেটা ব্যবহার করা উচিত।
ত্বকের যত্নে কেওড়া জলের ব্যবহার
ত্বকের যত্নে কেও জলের গুরুত্ব অনেক। তোকে ময়েশ্চারাইসন ও নরম রাখতে কেওড়া জেলার জুরি মেলা ভার। তাইতো প্রসাধনের সামগ্রীতে কেওড়া জল ব্যবহারের বিকল্প নেই। তাই যারা বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী এবং মুখে মাখা ক্রিম তৈরি করে যেসব কোম্পানি তাদের প্রচুর চাহিদা থাকে এই কেওড়া জলের । ত্বকের যত্নে কেওরা জল যেভাবে কাজ করে তা বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো :
ত্বককে নরম রখতে : ত্বকে নিয়মিত কেওড়া জল ব্যবহার করলে ত্বক নরম থাকে এবং ত্বককেত উজ্জ্বলতা বাড়ে।
বয়সের ছাপ কমাতে : কেওড়া জল বয়সের ছাপ কমাতে ভীষণ সাহায্য করে। কেওড়া জল ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেবেনা। বৃদ্ধ বয়সে আপনার ত্বকে থাকবে তারুণ্যের ছাপ।
ত্বকের প্রদাহ কমাতে : কেওড়া জলে থাকে আন্টি ইনফ্লামেটারি মুখে হওয়া ব্রণ ও ফুসকুড়ি ও ত্বকের অন্যান্য প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ত্বক পরিষ্কার রাখতে : বিভিন্ন ফেসওয়াশ ও মুখে মাখা ক্রিমে কেওড়া জল ব্যবহার করা হয়। কারণ কেওড়া জলে থাকে এক ধরনের উপাদান ত্বকের ছিদ্রে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার : একটি কটন প্যাড নিয়ে কেওড়া জলে ভিজিয়ে মুখ ঘার পরিষ্কার করতে হবে। তাছাড়া ফেসপ্যাক বা মাস্কের সাথে কাওড়া জল ব্যবহার করা যেতে পারে।
খাবারে কেওড়া জলার ব্যবহার
খাবারে কেওড়া জলের ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। আমরা যে বড় বড় রেস্টুরেন্টে বা হোটেল বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও মুখরোচক খাবার খায় সেসব খাবারে কেওড়া জল ব্যবহার করা হয়। বড় বড় বাবুর্চি বা শেপরা রান্না সুস্বাদু কেওরা জল ব্যবহার করে থাকেন। কেওড়া জল ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ বাড়ে এবং সুগন্ধ ছড়ায়। তাছাড়া কেওড়া জল স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় খাবারে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কেওড়া জল যে সব খাবারে ব্যবহার করা হয় তা বর্ণনা করা হলো: প্রধানত বিরিয়ানি, পোলাও, কোরমা, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, কেক ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। কেওড়া জল ব্যবহার করলে খাবার আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে কিন্তু কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাসি পচাঁ খাবারের সাথে কেওড়া জল মিশিয়ে কাস্টমারদের দিচ্ছে যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। রান্নার কাজে কেওড়া জল সামান্য পরিমাণ ব্যবহার করতে হয়। আজকাল বিরিয়ানি রান্নাতে কেওড়া জলের ব্যবহার উঠেছে।
স্বাস্থ্যের জন্য কেওড়া জল কতটা উপকারী
আমাদের প্রতিদিনের জীবন জাপনে কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার এর সুবিধা নিয়ে আসছি। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন খাবার দাবার এরসাথে কেওড়া জল খেয়ে আসছি। এবং প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকে কেওড়া জল ব্যবহার করে থাকছি। আমরা প্রতিদিন জেনে না জেনে কেওড়া জল ব্যবহার করে আসছি কিন্তু এটা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী না ক্ষতিকর্ তা আমারা অনেকেই জানিনা। এই ধারণা অবসান ঘটাতে চাইলে আমাদের আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়ুন।
আজ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে জড়াজল স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী না ক্ষতিকর তা জানাবো।
হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে: কেওড়া জল হজম শক্তি বাড়িতে সাহায্য করে এবং পেটের সমস্যার সমাধান করে।
মানসিক চাপ কমায়: কেওড়া জলের সুগন্ধে মন শান্ত থাকে এবং মানসিক চাপ কমায়।
শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে সাহায্য করে : এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং অতিরিক্ত গরমের অনুভূতি কমাতে সাহায্য করে।
কেওড়া জল ব্যবহারে সতর্কতা
কেওড়া জল প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হলেও এটি ব্যবহারে আমাদের সতর্ক হতে হবে আমাদের শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কেওড়া জলে বিভিন্ন উপাদান থাকে।তাই এসব উপাদানের কথা চিন্তা করে যাদের এলার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদেরকে কেওড়া জল ব্যবহার সতর্ক থাকতে হবে। কেওড়া জল একবার ব্যবহার করার ফলে যদি এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা যায় তবে পরবর্তীতে এটি না ব্যবহার করাই ভালো।
খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্য কেওড়া জল ব্যবহার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা খুব সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে এতে খাবারের মানও বজায় থাকবে শরীরেও কোনো ক্ষতি হবে না। বাইরে খাবার খেলেও আমাদের সতর্কতার সহিত খাবার খেতে হবে। খাবারের মান ও কুয়ালিটি যাচাই করে খাবার খেতে হবে। কারণ আজকাল অনেক অসত ব্যবসায়ী অনেকদিনকার বাসি খাবার এর সাথে কেওড়া জল মিশিয়ে সুগন্ধ ছড়িয়ে খাবার সাপ করছেন। যেসব খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। বাইরের এসব খাবার খেয়ে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের পেটের অসুখ যেমন ডায়রিয়া, কলেরা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভুগছেন।
আরো পড়ুনঃ থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তাছাড়া আমরা যে প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করি যেমন মুখে মাখা ক্রিম, লোশন, পারফিউম ইত্যাদি। এসব প্রসাধনের সামগ্রীতেও কেওড়া জল ব্যবহার করা হয়।তাই এসব জিনিস ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এসব জিনিসের উৎপাদন তারিখ কতদিন মেয়াদ আছে তা দেখে ব্যবহার করতে হবে। জিনিস ব্যবহার করলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। কেওড়া জলের মধ্যে যে উপাদান গুলো থাকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ফলে সেগুলো শরীরের বিরূপ প্রভাব পড়ে। যেমন স্কিন পুড়ে যায়, মুখে মেছতা হয় এমন কি স্কিন ক্যান্সার হতে পারে। তাছাড়া এর আগে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কেওড়া জলের ক্ষতিকর দিক
কেওড়া জল একটি গাছ থেকে পাওয়া যায়। তাই কেওড়া জলের তেমন ক্ষতিকর দিক নাই তবে এটি ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। তাছাড়া কেওড়া জল সেবন ও ব্যবহারে যাদের এলার্জির জনিত সমস্যা রয়েছে। তাদেরকে কেওড়া জল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। আজকাল অধিক লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাসি খাবারের সাথে কেওড়া জল মিসাছে এবং কিছু মেয়াদ উর্তিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী নিয়ে ব্যবসা করছে। সাধারণ মানুষের এসব জিনিস কিনে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে।
সর্বশেষঃ কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার
কেওড়া জলের উপকারিতা ও ব্যবহার নিয়ে আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলটি সাজিয়েছিলাম। এই আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরেছি কেওড়া জলের বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহার ও আমাদের শরীরে কি কি উপকার করে তা নিয়ে। কেওড়া জল হচ্ছে গাছ থেকে পাওয়া এক ধরনের তরল পদার্থ। যা আমরা রান্নার কাজে বা প্রসাধনী সামগ্রীতে ব্যবহার করে থাকি। কেওড়া জল রান্নার কাজে ব্যবহার করলে রান্নার স্বাদ বাড়ে এবং রান্না আকর্ষণীয় হয়। তাছাড়া কেওড়া জলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং এর অনেক গুনাগুন রয়েছে।
আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা কেওড় জলের বিভিন্ন উপকারী ও ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেছি। এবং এর বিভিন্ন কাজে এর ব্যবহার আলোচনা করেছি। কেওড়া জল ব্যবহারের সতর্কতা নিয়ে আলোচনা করেছি। তাই আমাদের আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তো অবশ্যই আমাদের ওই সাইটের সাথেই থাকুন। পরবর্তী আপডেট পেতে ফলো দিয়ে রাখুন।
এএন আইটি কেয়ার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url